ফাইল ছবি।
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: গভীর রাতে বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে হাতির হানা। তাতে প্রাণ হারালেন দুধের শিশু-সহ একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুঞ্জনগর বনাঞ্চল লাগোয়া সিংপাড়ার শোকের ছায়া।
শুক্রবার রাত। ঘড়ির কাঁটায় ১টা হবে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুঞ্জনগর বনাঞ্চল লাগোয়া সিংপাড়ায় বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে হাতির পাল। কমপক্ষে ৭টি হাতি ছিল। বনকর্মীরা হাতি তাড়াচ্ছিলেন। সেই সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন দাস পরিবারের সদস্যরা। হাতির সামনে পড়ে যান মনোজ দাস। তাঁকে হাতি আছড়ে মারে। মনোজের মা মাখনরানি দাস ছেলেকে বাঁচাতে যান। সেই সময় তাঁর কোলে ছিলেন ৩৫ দিনের নাতনি মনীষা দাস। বৃদ্ধাকে পিষে মারে হাতি। তাঁর কোল থেকে ছিটকে পড়ে ৩৫ দিনের নাতনি। দুধের শিশুরও মৃত্যু হয়। হাতির হামলায় একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে নেমেছে শোকের ছায়া।
উল্লেখ্য, উত্তরের লোকালয়ে বেড়েছে বুনো হাতির আনাগোনা। মালবাজার, মেটেলি, বানারহাট ও নাগরাকাটা, আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ও মাদারিহাট এবং শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, খড়িবাড়ি, ফাসিদেওয়া ব্লকের বাগডোগরা, বুড়াগঞ্জ, হাতিঘিসা, মণিরাম, কেটুগাবুরজোত, মতিধর, গিরিশচন্দ্র, মানঝা চা বাগান এলাকায় মূলত হাতির হানা বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে বিপদ। বাড়ছে মানুষ-হাতি সংঘর্ষ, মৃত্যু। বনকর্তাদের মতে, হাতির করিডর ক্রমশ দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে জঙ্গল এলাকা টুকরো পকেটে পরিণত হয়েছে। তাই চলাচলের পথে বাধা পেয়ে হাতি মারমুখী হচ্ছে। বনদপ্তরের তরফে হাতির হানা রুখতে ফেনসিং-সহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে তাতে আখেরে লাভ কতটা হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনায় উঠছে সে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.