Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tiger

‘তুমি যে এ ঘরে…’, বাঘের সঙ্গে আধঘণ্টা বন্ধ ঘরে ঝাড়খণ্ডের কৃষক, উদ্ধার পেলেন কীভাবে?

অবশেষে সন্ধের দিকে খাঁচাবন্দি হয় 'জিনাত সঙ্গী' রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি।

Tiger enters villagers house in Purulia-Jharkhand border

গৃহস্থের ঘরে বান্দোয়ানের বাঘ। নিজস্ব চিত্র

Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 25, 2025 12:04 pm
  • Updated:June 25, 2025 7:24 pm   

সুমিত বিশ্বাস, সিলি (ঝাড়খণ্ড): ‘পায়ে পড়ি বাঘ মামা, কোরো নাকো রাগ মামা, তুমি যে এ ঘরে কে তা জানত…’ গুপির গান কে না শুনেছে! কিন্তু সে তো সেলুলয়েডের পর্দায়। বাস্তবে এক মধ্যবিত্ত গৃহকর্তা ব্যাপারটা চাক্ষুষ করলেন। বন্ধ ঘরে আধঘণ্টা শার্দুল থুড়ি ‘বাঘমামা’র সঙ্গে কাটালেন তিনি। বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের গ্রামের ওই বাসিন্দা। তবে তিনি গুপির মতো গান গাননি বরং সুকৌশলে নিজেকে নিজেই উদ্ধার করে চমকে দিলেন সকলকে।

Advertisement

এবার এক্কেবারে মধ্য়বিত্তের ঘরে ঢুকে পড়ল ‘জিনাত সঙ্গী’। বন্ধ ঘরে আধঘণ্টা শার্দুলের সঙ্গে কাটালেন খোদ গৃহকর্তা। যদিও স্বভাবসিদ্ধ ঢঙেয় তাঁকে আক্রমণ করেনি বান্দোয়ানের বাঘটি। আপাতত বাংলা-ঝাড়খণ্ডের সীমানার গ্রামে ঘরবন্দি সে। উদ্ধার করতে রাঁচি থেকে বনকর্মীদের দল রওনা দেয়। তারপর অবশেষে সন্ধের দিকে খাঁচাবন্দি হয় ‘জিনাত সঙ্গী’ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি। ৬ মাসের ভবঘুরে যাত্রার ইতি হল আজ।

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ড থেকে বান্দোয়ানে ঢুকেছিল বাঘটি। কিন্তু বর্তমানে পথ ১৮০ ডিগ্রি বদলেছে সে। বর্তমানে পুরুলিয়ার ঝালদা বনাঞ্চলের কাছে সিলি রেঞ্জের (ঝাড়খণ্ডের রাঁচি ডিভিশনের অন্তর্গত) মারদু গ্রামে হদিশ মিলেছে তার। এই গ্রামের পাশেই রয়েছে সুবর্ণরেখা নদী। সেই নদী পেরলেই পুরুলিয়ার তুলিন গ্রাম।

মারদু গ্রামের বাসিন্দা পুরন্দর মাহাতো। চাষাবাদ করেন। এদিন সকাল সাড়ে চারটা নাগাদ ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। গোয়াল ঘর থেকে গবাদি পশুগুলিকে বের করছিলেন তিনি। সেই সময় হলদে-ডোরাকাটা বিশালাকৃতি বাঘটি ঝাঁপ দিয়ে সেই গোয়াল ঘরে ঢুকে পড়ে। বিছানাহীন একটি চৌকি ছিল ঘরটিতে। সেই চৌকির উপর চড়ে স্বমেজাজ বসে পড়ে ‘বাঘমামা’। ওই ঘরে চৌকির পাশে পরিবারের তিনটি শিশু ঘুমোচ্ছিল। কোনক্রমে সেই তিনজনকে বের করে আনেন পুরন্দর। কিন্তু বেকায়দায় দরজা আটকে যাওয়ায় ঘরের ভিতরই আটকে পড়েন গৃহকর্তা। এরপর দমবন্ধ করা আধঘণ্টা সময়। কার্যত নিষ্পলকভাবে দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকা। সামনে অবশ্য তাগড়া শিকার পেয়েও ঝাঁপায়নি বাঘটি। বরং কোনক্রমে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন পুরন্দর। সেই ঘরেই আপাতত আটকে বাঘটি। তারকে উদ্ধার করতে রাঁচি থেকে বনবিভাগের টিম রওনা দিয়েছে। 

গত বছরের শেষদিনে ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল বনাঞ্চলে প্রথম হদিশ মেলে বাঘটির। তারপর বান্দোয়ান হয়ে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি হয়ে ঝাড়খণ্ডের দলমা এলাকায় পদচারণা করে সে। আবার বান্দোয়ানে ফিরে আসে সে। মাঝপথে বাঁকুড়ার মাটিও ছুঁয়ে আসে সে। শেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি বান্দোয়ানে তার রেকর্ডেড উপস্থিতি মিলেছিল। ১ মার্চ দলমাতে ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাঘটির গতিবিধি। এর মাঝে আর তার হদিশ মেলেনি। এর মধ্যেই তাকে রেডিও কলার পরাতে চেয়ে টাইগার কনজারভেটিভ অথোরিটিকে চিঠি দিয়েছিল ঝাড়খণ্ড সরকার। সেই অনুমতি এখনও মেলেনি। এর মধ্যেই গৃহস্থের ঘরে ঢুকে বসল ‘জিনাত সঙ্গী’।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ