Advertisement
Advertisement

Breaking News

UGC-NET

NET-এ শীর্ষস্থানে দুই বঙ্গকন্যা, গবেষক হতে চান পিতৃহারা রিক্তা, নিলুফার লক্ষ্য শিক্ষকতা

বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে দু'জনের এই সাফল্যের জন্য তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও।

UGC-NET 2025: Topper Nilufa Yasmin and Rikta Chakraborty's aim is different
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 24, 2025 7:55 pm
  • Updated:July 24, 2025 7:57 pm   

ধীমান রায় ও অর্ণব দাস, কাটোয়া ও বারাসত: কারও সঙ্গী ছিল ব্যর্থতা। কাউকে আবার ছোটবেলা থেকে সহ্য করতে হয়েছে বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা। সেসব কালো দিন কাটিয়ে এখন তাঁদের জীবনে আলোর ছটা। সর্বভারতীয় ইউজিসি-নেটে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করা দুই বঙ্গকন্যা এখন আগামী দিনের স্বপ্নে বুঁদ। এমন সাফল্য বদলে দিয়েছে তাঁদের জীবন। এবছর UGC-NET(JRF) অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্কে একেবারে পয়লা নম্বরে কাটোয়ার নিলুফা ইয়াসমিন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১০০ পারসেন্টাইল। এমন তাক লাগানো ফলাফল করা নিলুফার লক্ষ্য শিক্ষকতা। একই পরীক্ষায় দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে রয়েছেন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা রিক্তা চক্রবর্তী। তিনি সর্বভারতীয় স্তরে জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনে দ্বিতীয় হয়েছেন। তিনি অবশ্য শিক্ষকতার চেয়েও বেশি চান গবেষণা করতে।

Advertisement

কাটোয়ার পালিটা রোড এলাকার বাসিন্দা নিলুফার এই চূড়ান্ত সাফল্যের নেপথ্যে অবিচল মনোযোগ, কঠোর অধ্যবসায় আর অদম্য জেদ। নিলুফা জানিয়েছেন, এর আগেও দু’বার তিনি এই পরীক্ষায় বসেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। তবে আশা ছাড়েননি। অনেকেই হয়তো সেখানেই থেমে যেতেন কিন্তু নিলুফা থামেননি। বরং প্রতিবার ব্যর্থতার পর নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছেন, নিজের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে এগিয়ে গিয়েছেন এবং পেয়েছেন প্রত্যাশিত সাফল্যও। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কী? উত্তরে নিলুফা বলেন, ”দেশের একজন শিক্ষিকা হিসেবে গবেষণায় অবদান রাখতে চাই। উচ্চশিক্ষার জগতে কিছু অর্থবহ কাজ করতে চাই। ভবিষ্যতে পিএইচ.ডি-তে ভর্তি হয়ে গবেষণার মাধ্যমে সমাজে কিছু ফিরিয়ে দেওয়াই এখন লক্ষ্য।”

কাটোয়ার কৃতী কন্যা নিলুফা ইয়াসমিন।

অন্যদিকে, ইউজিসি নেটে সর্বভারতীয় স্তরে জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনে দ্বিতীয় হলেন মধ্যমগ্রাম বিধানপল্লির বাসিন্দা রিক্তা চক্রবর্তী। দুটি পেপার মিলিয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৯৯ শতাংশ। আগামীতে অধ্যাপনার সুযোগ থাকলেও কৃতী এই ছাত্রী গবেষণা করতে চান বলেই জানিয়েছেন। মাত্র সাত বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন রিক্তা। তারপর মা রিনাদেবী রেলে চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরেন। রিক্তা মধ্যমগ্রাম গার্লস হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর দক্ষিণেশ্বরের হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেন থেকে স্নাতক হন। ২০২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনে স্নাতকোত্তর পাশ করে নেটের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন রিক্তা।

মা ও ভাইয়ের সঙ্গে মধ্যমগ্রামের রিক্তা চক্রবর্তী।

চলতি বছর জুনে এই পরীক্ষার পর ২১ জুলাই ফলপ্রকাশ হয়েছে। তাতেই দেখা গিয়েছে, নিজের বিষয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন রিক্তা। এই খবর জানতে পেরে বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানান পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ। চেয়ারম্যানের বলেন, “মধ্যমগ্রামের মেয়ের এই সাফল্য আমাদের কাছে গর্বের। আমরা সবসময় পরিবারের পাশে আছি।” রিক্তা জানিয়েছে, “পরিবার সবসময় আমায় পাশে থেকেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ভীষণভাবে সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষকতার সুযোগ থাকলেও এত দূর যখন পড়াশোনা করেছি, তখন আরও একটু পড়াশোনা করতে চাই। তাই গবেষণা করব বলেই ঠিক করেছি।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ