অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানির কাছ থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে একাধিক মহিলার থেকে সমস্ত নথি নিয়ে সেই ঋণের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ! ধৃত টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা সাহিন পরভিন (২৪) নামে ওই তরুণী। বুধবার রাতেই হাওড়া থানার পুলিশ ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ধৃত ওই তরুণী কীভাবে অভিনব কায়দায় এই প্রতারণা চালাত তা জানতে ইতিমধ্যে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, কীভাবে ওই মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানি এভাবে একজন তরুণীকে অনেক জনের হয়ে ঋণ দিল তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এর পিছনে সংস্থার কেউ জড়িত কিনা তাও তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, টিকিয়াপাড়ার হামিদ মুন্সি লেনের বাসিন্দা সাহিন পরভিন একাধিক মহিলাকে টার্গেট করে! জানা যায়, একটি মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানি থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মহিলাদের কাছ থেকে আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি জোগাড় করে। তারপর যাঁদের কাছ থেকে ওই নথি নেয় তাঁদের না জানিয়েই ওই ফাইনান্স সংস্থা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নেয় ওই তরুণী, মহিলাদের দেওয়া তো দূর, সেই টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। এলাকার মহিলারা বিষয়টি জানতে পারেন তখন, যখন ওই মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানির লোকেরা এলাকার মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানায়, তাঁদের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণ রয়েছে। অথচ তাঁরা সেই টাকা হাতে পাননি। তখনই ওই এলাকার মহিলারা বুঝতে পারেন ঋণ দেওয়ার নামে তাঁদের নথি নিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন অভিযুক্ত সাহিন পরভিন। একেবারে অভিনব কায়দায় তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এর পরই বুধবার সাহিনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান টিকিয়াপাড়া এলাকার প্রতারিত মহিলারা। শুধু তাই নয়, বুধবার রাতেই হাওড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। অভিযোগের ভিত্তিতে সাহিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
টিকিয়াপাড়া এলাকার অনেক মহিলারাই জানান, তাঁদের ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন ছিলে। তাই সাহিন যখন তাঁদের কাছে গিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় তখন তাঁরা তাতে রাজি হয়ে যান। এমনকী সাহিনকে মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানির প্রতিনিধি ভেবে ঋণ পাওয়ার জন্য তার হাতে আধার কার্ডের মতো নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথি এলাকার মহিলারা দিয়ে দেন। আর এরই সুযোগ নিয়ে মহিলাদের নামে মাইক্রো ফাইনান্স কোম্পানি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে নিয়ে তা নিজে আত্মসাৎ করে সাহিন। এলাকার মহিলারা জানতেই পারেননি তাঁদের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ উঠে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.