Advertisement
Advertisement

Breaking News

Cheetah

চিতা-ভস্ম

প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাকে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেন?

Cheetah deaths in Kuno National Park, wwho to blame? | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 17, 2023 6:33 pm
  • Updated:July 17, 2023 6:33 pm   

কুনো-য় আফ্রিকীয় চিতাদের পুনর্বাসন নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক ছিল। একের পর এক চিতার মৃত্যুতে সেই বিতর্ক আশঙ্কার রূপ নিচ্ছে।

Advertisement

হোক মনুষ্যেতর, তবু রক্তমাংসের প্রাণী তো। তাই মধ্যপ্রদেশের কুনো অভয়ারণ্যে নামিবিয়া থেকে আনা একের-পর-এক চিতার মৃত্যু নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। জাগছে নানা প্রশ্ন। যে-দেশ একসময় অজস্র চিতার বিচরণস্থল ছিল, সেখান থেকেই তারা লোপ পেয়েছিল। আর তাই অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বিদেশ থেকে চিতা আমদানি করা হল। সেজন্য প্রচারের ঢক্কানিনাদ মোটেও কম ছিল না। সাফল্যের কৃতিত্ব নিজেদের ঝুলিতে ভরে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কোনও দলই চেষ্টার কসুর করেনি। একইভাবে তাই পরের পর চিতার মৃত্যুতেও রং লেগেছে রাজনীতির। কমবেশি প্রতিটি দলই নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত। মাঝখান থেকে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে ‘অসহায়’ প্রাণীগুলি।

অসহায় কেন? এমনিতে যতই তারা হিংস্র, মাংসাশী হোক না কেন, প্রকৃতির কাছে ‘অসহায়’ তো বটেই। নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার চেনা পরিবেশ থেকে মধ্যপ্রদেশের জঙ্গল তাদের কাছে অজানা রহস্যে ঘেরা। সেখানে মানিয়ে নিতে না নিতেই একের পর এক আঘাত। গত চার মাসে আটটি চিতা ও শাবক মারা গিয়েছে। সবচেয়ে অস্বস্তির বিষয়, তাদের মৃত্যু সম্পর্কে প্রকৃত কারণ জনসমক্ষে আসছে না। এমনিতে সরকারি সব তথ্য প্রকাশ করা হয় না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে স্বচ্ছতারও প্রয়োজন রয়েছে।

[আরও পড়ুন: যিনি মাছ খান তিনি আবার কীসের সন্ন্যাসী!]

যেহেতু, কুনো-র জঙ্গলে চিতাদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত প্রথম থেকেই বিতর্কিত। সেখানকার পরিবেশে, চিতাদের বিচরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিসরের অভাবের কথা আগেও সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে তাদের পর্যাপ্ত খাদ্যের বন্দোবস্ত নিয়েও। অন্য কোনও জঙ্গলে তাদের সরানো যায় কি না, ভেবে দেখতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্টও। তারপরেও রাজনীতির কারণে বিষয়টি আরও ঘেঁটে গিয়েছে। চিতাদের মৃত্যু নিয়ে বনকর্তাদের বক্তব্যে অসংগতি সংশয় আরও বাড়িয়ে তুলছে। নতুন জায়গায় এসে মানিয়ে নিতে না পেরে মৃত্যু অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক দু’টি ক্ষেত্রে তেজস ও সুরজের দেহে যে ধরনের ক্ষত দেখা গিয়েছে, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকেই তা হতে পারে। তাহলে তাদের উপর নজরদারি অভাব নিয়ে প্রশ্ন কি অসংগত? নামিবিয়া থেকে কুনোয় আনার আগে সম্ভাব্য পরিবেশের পার্থক্য, বিরূপ কী কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে সঠিকভাবে সমীক্ষা হয়েছিল কি? প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাকে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেন? দু’-দফায় ২০টি চিতা আনা হয়েছিল নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। তাদের প্রত্যেককে একই জায়গায় ছাড়া হল কেন?

আগামী এক দশকে আফ্রিকা থেকে ভারতে চিতা আনার জন্য প্রয়োজনীয় চুক্তি করা হয়েছে। সুতরাং চিতা আসায় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কুনো। কিন্তু তাদের যদি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে চুক্তির ভবিষ্যৎ দীর্ঘস্থায়ী হবে তো? বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদরাও আপত্তি তুলতে পারেন। তাই ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা না ভেবে চিতাদের সুস্থ, সবল ও দীর্ঘজীবী করার দিকে সংশ্লিষ্ট সকলে নজর দেবেন, এটাই কাম্য।

[আরও পড়ুন: ২৪-এ হ্যাটট্রিক করতে না পারলে নেহরুকে ছোঁবেন কী করে মোদি?]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ