ইশা সাহা: উত্তমকুমার আমার চোখে কী? উত্তরটা খুব গুছিয়ে দিতে পারব না। ওঁকে চিনলাম কী করে সেটা বলি আগে। আমার বাবা উত্তমকুমারের মস্ত বড় ফ্যান। ছোটবেলায় বাড়িতে সাদা-কালো টিভি ছিল। আর ভিসিআর ছিল। তখন সিনেমার ক্যাসেট কিনে এনে চালানো হত। উত্তমকুমার অভিনীত এক-একটা ছবি বাবা নিয়ে আসত। ‘দেয়া নেয়া’, ‘শাপমোচন’, ‘সপ্তপদী’ সেই সূত্রেই একদম ছোটবেলায় দেখেছিলাম। তখন উত্তমকুমার কী বুঝিনি। বড়দের সঙ্গেই সিনেমাগুলো দেখতাম, আমরা বাচ্চারা মাটিতে মাদুর পেতে বসে পড়তাম। সেই সিনেমা দেখার অভ্যাসটা শুরুই হয়েছিল উত্তমকুমারের ছবি দিয়ে। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝেছি, এই মানুষটা একটা ব্যাপার। সুপারস্টার বলতে যা বোঝায় উনি তাই।
ছোটবেলায় তো কখনও ভাবিনি আমি অভিনয় করব। কিন্তু সেই সময় যখন ওঁর ছবিগুলো দেখতে ভালো লাগছে, শুধু গল্প বা সংলাপ নয়, আমরা উপভোগ করতাম ওই বয়সেও। টিভি-তে দেখতাম ওঁর আর সুচিত্রা সেনের কেমিস্ট্রি এবং অন্যদের সঙ্গেও ওঁর ছবি– যেগুলো দেখে মনে হয়েছে, এরকম একটা মানুষ অ্যাপিয়ারেন্সে ভীষণ সাধারণ, কিন্তু তা সত্ত্বেও অসাধারণ। কী মায়াবী একটা মুখ– মাকেও বলতে শুনেছি এরকম কথা। মায়ের আগ্রহের থেকেই আমার আগ্রহ বাড়ে। উত্তমকুমারকে চিনি এইভাবে। বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে এসে আরও বুঝতে পারি, উনি কী ছিলেন! বাংলা সিনেমার এক এবং অদ্বিতীয় সুপারস্টার তিনি। বাকিদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, উত্তমকুমারের উপরে কেউ নেই। আক্ষরিক অর্থে মহানায়ক। শুধুই গল্প শুনে বুঝতে পারি, উনি সবার উপরেই থাকবেন।
কখনও উত্তমকুমারের নায়িকা হতে চেয়েছি কি না? যখন অভিনয়ে আসিনি, কলেজে পড়ি, মোটামুটি প্রেম বুঝি তখন এমন মনে হয়েছে, এটা তো হতে পারত! নায়িকা হতে তো কখনও চাইনি, তাই সেই সব দিনে ওই ভাবনায় সাহস পাইনি। এই ফিল্ম জগতে এসে পরে মনে হয়েছে, এখন যদি উনি বেঁচে থাকতেন, তাহলে হয়তো হতে পারত। কী রোমান্টিক লুক ওঁর! মন্দ কি, হতেই পারত! আর কোনও নায়ক মহানায়ক হতে পারেননি, কারণ কেউ উত্তমকুমার নন। দর্শকের সঙ্গে ওই কানেকশন কোথায়? আর সময়ও পালটেছে, রুচি বদলেছে। তবে আমার চেনা বৃত্তে উত্তমকুমারের বিষয়ে রুচি বদলেছে, বলে মনে হয় না। উত্তমকুমার তো উত্তমকুমারই। ওই ‘অরা’ অবিশ্বাস্য।
উত্তমকুমার যদি ফিরে আসেন? ভাবতে অদ্ভুত লাগে। তখন যদি ‘সপ্তপদী টু’ হয়, তাহলে যেন ‘রিনা ব্রাউন’ করার সুযোগ পাই। খুব ইচ্ছে আছে, সুচিত্রা সেন অভিনীত যদি কোনও চরিত্রে অভিনয় করতে পারি। আর পর্দায় উত্তমকুমারকে চুমু খাওয়ার সুযোগ পেলে? মিস করতাম না। আমরা সবাই খুব পেশাদার। টেনশন হত, উনি চুমুটা খাবেন কি না। যদি সুযোগ পেতাম, চুমুটা খাওয়ার পর ধপাস করে পড়েও যেতাম হয়তো (হাসি)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.