Advertisement
Advertisement

Breaking News

Koushani Mukherjee

অন্তরঙ্গ দৃশ্যে কৌশানীর অস্বস্তি কাটাতে বাংলা ছবিতে প্রথমবার ইন্টিমেসি কো-অর্ডিনেটর

'চুম্বন দৃশ্যে অভিনয়ের আগে বনির সঙ্গে পরামর্শ করেছি', বললেন কৌশানী।

Koushani Mukherjee's interview for 'Killbill Society'

ছবি ফাইল

Published by: Manasi Nath
  • Posted:April 11, 2025 7:39 pm
  • Updated:April 11, 2025 8:27 pm   

শম্পালী মৌলিক: চোখেমুখে ধরা পড়ছে আত্মবিশ্বাস। নতুন ছবির রিলিজ নিয়ে উচ্ছ্বসিত কৌশানী মুখোপাধ‌্যায়। অ‌্যাক্রোপলিসের আঠারো তলায় বসে বললেন, “অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল সৃজিতদার পরিচালনায় কাজ করব। ফাইনালি সেটা হল ‘কিলবিল সোসাইটি’-তে। দ্বিতীয়ত বলব, ঘরের মেয়ের ঘরে ফেরা। এসভিএফ-এর সঙ্গে প্রায় আট বছর পর কাজ করলাম। সলিড কামব‌্যাক। ছবিটার স্টোরিলাইন খুব গ্রিপিং। আর নারীকেন্দ্রিক কাহিনি। ছবিটা দেখলে বুঝবে।”

Advertisement

বলা চলে কেরিয়ারের সেরা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন কৌশানী। “২০১৮ সালও একটা ভালো ফেজ ছিল। যে সব হিরোদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল, হয়েছিল। তারপর আমি একটা ডাউনফল দেখেছি। কিছুদিন বিরতি নিয়েছি। তারপরে প্রত্যেক বছর একবারই কাজ করেছি। তবে ওই শেষ এক-দু’বছরের কাজের ভিত্তিতেই আজকে ‘কিলবিল সোসাইটি’ এসেছে আমার জীবনে। এই জার্নি আমাকে শিখিয়েছে, ধৈর্য রাখতে হবে। এই বেস্ট ফেজ-টা যাতে আরও অনেক দিন টেকে, কারও যেন নজর না লাগে সেই দিকে দেখতে হবে।” হেসে বললেন অভিনেত্রী।

‘বহুরূপী’-র পরেই জীবন বদল প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলছেন, “বহুরূপী’ বড় ব্রেক থ্রু, সেটা ‘আবার প্রলয়’ না ঘটলে হত না হয়তো। ‘বহুরূপী’-র পর ঘটল ‘কিলবিল’।” যদি তাঁকে বেছে নিতে বলা হয় রাজ চক্রবর্তী আর শিবপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়ের মধ্যে? “এ তো খুব বাজে ঘূর্ণি (হাসি)! আমার কাছে দু’জনে দু’ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দু’জনের সঙ্গেই আমার খুব ভালো বন্ডিং। আর সেটাই যেন থাকে। কারণ, দু’জনের সঙ্গেই আরও কাজ করার ইচ্ছে আছে। রাজদার প্রতি আমি পার্সোনালি বায়াসড। কারণ সেই ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’ দিয়ে আমার লঞ্চ হয়। ‘আবার প্রলয়’ আমার রি-লঞ্চ। দুটোই রাজদার হাত ধরে। শিবুদা হল আমার ‘ময়দামুখো’। এটা আলাদা ইকুয়েশন। এখানে স্বামী-স্ত্রী চরিত্র করতে গিয়ে আমাদের মধ্যে অদ্ভুত বন্ডিং তৈরি হয়েছিল। সেটা বন্ধুত্ব আর বোঝাপড়ার। আজকে পৃথিবীতে আমার সম্পর্কে যে যাই বলুক শিবুদাকে, সেটা আমার সঙ্গেই আলোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছবে, তাই শিবুদা আলাদা। আবার নন্দিতাদি আমার কাছে একদম মায়ের মতো ব‌্যক্তিত্ব।” অকপট কৌশানী।

‘কিলবিল সোসাইটি’র অফার কীভাবে পান জিজ্ঞেস করতে বললেন, “ঝড় যেভাবে আসে, সেইভাবে কিছু না বলে সৃজিত নামের ঝড় আসে আমার জীবনে। একদিন দুপুরে ফোন আসে সৃজিতদার। জিজ্ঞেস করে, ‘এই তোর অনস্ক্রিন চুমু খেতে সমস‌্যা আছে?’ আমার প্রশ্ন ছিল, ‘তুমি কী বলতে ফোন করেছ?’ দু’দিন আগে জেনেছিলাম এটার কাস্টিং চলছে। তখন রিলেট করতে পারি। বলেছিলাম যে, সমস‌্যা তো থাকবেই। এটা এরকম দৃশ‌্য নয় যে, সব ছবিতে করে থাকি।” তখন সৃজিত কৌশানীর সঙ্গে স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসতে চান। পুরো স্ক্রিপ্ট শোনার পর অভিনেত্রী হিসাবে লোভেই না করতে পারেননি। শোনা গিয়েছিল, ইন্ডাস্ট্রির এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে প্রাথমিকভাবে কৌশানীর চরিত্রটি অফার করা হয়েছিল। কৌশানী কতটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন? “প্রথমত, যার জন‌্য যে চরিত্র, সেটা কোথাও লেখা আছে। অনেকেই জিজ্ঞেস করেছে, আমি দ্বিতীয় পছন্দ ছিলাম কি না। অ‌্যাকচুয়ালি সেটা ম‌্যাটার করে না আমার কাছে। আমি করেছি এবং ছবিটা রিলিজ করছে (আজ)। ‘কিলবিল’ ওয়াজ মেন্ট ফর কৌশানী। শুটের দিনও আমার হাত-পা ঠান্ডা ছিল।’ সেদিন আমার শুধু ওই সিনটাই ছিল আর আগের দিন রাত থেকে আমি টেনশনে ছিলাম।” অকপট নায়িকা।

সাম্প্রতিক অতীতে টলিউডে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের শুটিং এবং নারীসুরক্ষার প্রসঙ্গ বারবার উঠে এসেছে বিভিন্ন ঘটনায়। এখানে বিশেষ কোনও কো-অর্ডিনেটর ছিল কি? “হ্যাঁ, মুম্বই থেকে একজন ইন্টিমেসি কো-অর্ডিনেটর, আস্থা তাঁর নাম, তাঁকে আনা হয়েছিল। তিনি আমি, পরমদা আর সৃজিতদার সঙ্গে আলাদা করে সেশন করেছিলেন। খুব টেকনিক্যালি বিষয়টা করা হয়। আর আমার বিপরীতে পরমদা, যে টেকনিক্যালি খুব সাউন্ড অ‌্যাক্টর।” বললেন কৌশানী। এই প্রথমবার বাংলা ছবিতে কোনও ইন্টিমেসি কো-অর্ডিনেটরের সাহায‌্য নেওয়া হল, তাই না? “হ্যাঁ, কারেক্ট। আমি অনেস্টলি বলছি, এই স্বাধীনতা আমাকে প্রোডাকশন হাউস থেকে দেওয়া হয়েছিল যে, আমি যদি বলি, যাই খরচ হোক ইন্টিমেসি কো-অর্ডিনেটর দরকার হলে তারা আনবে। আর আমার কমফর্টের জন‌্য আস্থা সেখানে সর্বক্ষণ ছিলেন। শটটা খুব টেকনিক্যালি নেওয়া হয়েছিল। এটাও সত্যি যে, একটা ছবিতে চুমু খেয়েছি বলে, সব ছবিতে রাজি হয়ে যাব তেমন নয়। তার জন‌্য স্ক্রিপ্টে দম থাকতে হবে।” পনেরো বছর আগের ‘হেমলক সোসাইটির’ মতো ‘কিলবিল সোসাইটি’-র গানও ইতিমধ্যে মানুষ ভালোবেসে ফেলেছে।

বনি সেনগুপ্ত কী বলছেন কৌশানীর সাফল্যের এই ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ দেখে? ‘‘আই থিঙ্ক, আমি যেভাবে উপভোগ করছি, বনি একা নয়, পরিবারের সবাই এনজয় করছে, পাশে আছে। অনেক অপেক্ষার পর এটা এসেছে। সবার ভালো লাগছে।” বলছেন তিনি। বনির সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন এই চুম্বন দৃশ্যের আগে? “হান্ড্রেড পার্সেন্ট। সব স্বাস্থ‌্যকর সম্পর্কেই এটা দরকার। আমার পার্টনারের মতামত গুরুত্বপূর্ণ। তবে শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিজেরই হয়, কাজের ক্ষেত্রে। ওর যা বলার ও বলেছিল। আগে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, এরকম কোনও দৃশ‌্য আমরা করব না। আমরা দু’জনে সম্পর্কে থাকার পর এটাই প্রথম ‘আইস-ব্রেক’ মোমেন্ট। আগে বনির ‘বরবাদ’-এ একটা লিপ কিস ছিল। কিন্তু তখন আমি ওর জীবনে ছিলাম না। তবে এটা প্রথম তেমন দৃশ‌্য যখন আমি ওর জীবনে রয়েছি। ফলে একটু সময় লেগেছিল। তবে চরিত্রের জন‌্য এটা অ‌্যাকসেপটেবল।” স্পষ্ট উত্তর অভিনেত্রীর।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ