সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক ধরেই চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে মমতা শঙ্কর। সম্প্রতি সংবাদ প্রতিদিন-এর সাক্ষাৎকারে প্রবীণ অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী ঋতুস্রাব, ধর্ষণ, শিশুদের শিক্ষা দেওয়া প্রসঙ্গে বেশকিছু মন্তব্য করেছিলেন। খানিক খোলসা করে বললে- শৈশব থেকে শিশুদের ‘গুড টাচ, ব্যাড টাচ’-এর পাঠ দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান মমতা শঙ্কর। আর তাঁর সেসব মন্তব্য ভাইরাল হতেই নেটপাড়ায় তুমুল হইচই। প্রশ্ন ওঠে, মমতা শঙ্কর কি নারী অগ্রগতির পরিপন্থী? এবার সংশ্লিষ্ট বিতর্কযজ্ঞে প্রবীণ শিল্পীর ভাইঝি তথা অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের মন্তব্যে যেন ঘৃতাহূতি পড়ল!
সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মমতা শঙ্কর জানিয়েছিলেন, কোনও নারী স্বল্পবসনা হলে তাঁকে দেখে কোনও পুরুষের বিকৃতকাম মনোভাব জাগতেই পারে। তাই প্রত্যেক মেয়েদের উচিত পোশাকে শালীনতা বজায় রাখা। এখানেই অবশ্য থামেননি বর্ষীয়াণ অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকরে তিনি এও উল্লেখ করেন যে, ছোটবেলা থেকে শিশুদের এত ‘গুড টাচ, ব্যাড টাচ’-এর পাঠ দেওয়ার দরকার কি? মমতা শঙ্করকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের সময় তো এসব ছিল না। তাই বলে গুরুজনরা গাল টিপে আদর করতে পারবে না?…’ পরিবর্তে বাড়ির বড়দের সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এবার সেপ্রসঙ্গেই দ্বিতীয় পোস্টে পরোক্ষভাবে পিসি মমতা শঙ্করকে বিঁধলেন শ্রীনন্দা।
তনুশ্রী শঙ্কর ও আনন্দ শঙ্করের কন্যা শ্রীনন্দা শঙ্কর। একসময়ে বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন। বর্তমানে অভিনয় থেকে দূরে। মা তনুশ্রী শঙ্করের সঙ্গে নাচের স্কুল চালাচ্ছেন। মুম্বইতে তাঁর সুখের ঘরকন্না। কিন্তু মমতা শঙ্করের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে তাঁকেও বংশপরিচয় নিয়ে নেটপাড়ায় কটু কথা শোনানো হয়। সেপ্রসঙ্গেই শ্রীনন্দা লিখলেন, “আমি কখনও আমার পরিবারকে ব্যবহার করে কোথাও পৌঁছইনি। আমার পথ আমি নিজে তৈরি করেছি। আমার কাজই আমার কণ্ঠস্বর। পাশাপাশি, আমি আমার দায়িত্বও পালন করি। মায়ের সঙ্গে আমাদের ডান্স স্কুল চালাই। যাঁরা সবকিছুতেই মহিলাদের দোষ দেন বা ধর্ষকের মানসিকতার প্রতি সহানুভূতি দেখান, তাঁদের সম্মান আমার দরকার নেই। আমি আমার বাবা ও ঠাকুরদাকে গভীরভাবে সম্মান করি। তাঁরা আজ আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু ওঁদের মনোভাব এমন ছিল না।” সেই পোস্টেই শ্রীনন্দার সংযোজন, “আমি কখনোই এমন কিছু সমর্থন করব না, যা কোনও শিশুকে ‘না’ বলতে বাধা দেয়। যদি ছোটবেলায় এসব আমরা জানতাম, তাহলে অনেক খারাপ ছোঁয়া এড়াতে পারতাম।”
প্রসঙ্গত, রবিবার মমতা শঙ্করের নামোল্লেখ না করেই শ্রীনন্দা চলতি বিতর্ক নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। তার পর থেকেই নেটভুবনে কটু কথার শুনতে হচ্ছে তাঁকে। এমনকী এও দাবি করা হয়েছে যে, তিনি বংশ পরিচয় ব্যবহার করেই সবকিছু অর্জন করেছেন! নিন্দুকদেরও ছেড়ে কথা বলেননি তনুশ্রীকন্যা। শ্রীনন্দার কথায়, “পোস্টটা আমি বাংলায় লিখেছি, কারণ আমার জাতীয় স্তরের দর্শকরা আমাকে ভালোবাসেন আমি কে, সেটা জানার জন্য— আমি কোন পরিবার থেকে এসেছি, তার জন্য নয়। আমি সিনেমা করেছি, আবার বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছেড়েও দিয়েছি। কারণ এটা আমার জগৎ নয়। আর সেটা বলার সাহস আমার আছে। কেউ যদি ভাবে আমি খ্যাতির জন্য এসব করছি, তবে বলব, এই কারণেই আমি কলকাতা ছেড়ে চলে এসেছি।” শ্রীনন্দার পোস্টের পরই নেটপাড়ার একাংশের মন্তব্য, ‘এবার শঙ্কর পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্ব রীতিমতো প্রকাশ্যে।’ যদিও শ্রীনন্দা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে এই বিষয়ে আর একটিও মন্তব্য করবেন না তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.