নদীর জলে ডুবে কৃষিজমি। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: হড়পা বানে বিধ্বস্ত হয়েছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলা এবং শিলিগুড়ি মহকুমার কৃষি বলয়। মারাত্মক ক্ষতির মুখে কয়েক হাজার আমন ধান চাষি। কাদায় তলিয়েছে বেগুন, লঙ্কার মতো সবজি খেত। নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ঝিঙে, পটল, শসার মতো মাচার ফসল। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি দপ্তর সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। কিন্তু চাষের মাঠ জল-কাদায় ভরে থাকায় এখনও সব এলাকায় ঢুকতে পারেননি কৃষি দপ্তরের কর্তারা। যদিও আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আমন ধানে সবে শীষ এসেছে। কয়েক দিন পরই কেটে ঘরে তোলার কাজ শুরু হত। ঠিক ওই মুহূর্তে রবিবারের হড়পা বান ধুয়েমুছে সবই সাফ করেছে। প্রাথমিক হিসেবে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলা এবং শিলিগুড়ি মহকুমায় প্রায় তিনশো হেক্টর ধানের খেত নষ্ট হয়েছে। রামশাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর বিপ্লব দাস বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলার জলঢাকা ও তিস্তা নদীপাড়ের ধান চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি, বানারহাট, ধূপগুড়ি, নাগরাকাটা ও রাজগঞ্জ।” আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট, আলিপুরদুয়ার-১/২, কালচিনি, কুমারগ্রামে বেশি ক্ষতি হয়েছে। শিলিগুড়ির নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা মেচি নদীর জলে তলিয়েছে। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ এলাকাতেও ধানের খেত জলের তলায়।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ হেক্টর জমিতে ৪ টনের বেশি ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। হড়পা বানে প্রায় চারশো হেক্টর ধানের খেত কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সবজি চাষেও বিপদ গর্জেছে। জলে ভেসেছে ফুলকপি, বাধাকপি, টমাটোর বীজতলা। বিঘার পর বিঘা জমিতে ফলন্ত বেগুন গাছ কাদায় তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। গধেয়াকুঠি এলাকায় জলের তোড়ে ভেসেছে সিম, লাউ, শসা মাচা। কৃষিদপ্তরের এক কর্তা জানান, সমীক্ষার কাজ চলছে। ব্লকস্তরের কর্মীরা সব দিক খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরির কাজ করছেন। এই অবস্থায় আগামী দিনে কী হবে? এই লোকসান কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে? সেই ভাবনাতেই এখন মাথায় হাত কৃষকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.