সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবসরের অনতিবিলম্ব পরই সরকারি পদে। কেউ কেউ আবার সরাসরি যোগ দিচ্ছেন রাজনীতিতে। বিচারপতিদের এই প্রবণতা নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন খোদ প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। তিনি বলছেন, “কোনও বিচারপতি যদি অবসরের পরই অন্য কোনও সরকারি পদ নেন, বা বিচারপতির আসন ছেড়ে রাজনীতিতে পা রাখেন, তাহলে সেটা নৈতিকতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেয়।”
কেন্দ্রের মোদি জমানায় বিচারপতিদের অবসরের পর বিভিন্ন ধরনের পদ পাওয়া নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি রঙ্গনাথন মিশ্রা রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তো বিচারপতির আসন থেকে অবসর নেওয়ার কয়েকদিন বাদেই বিজেপিতে যোগ দেন। পরে লোকসভার সাংসদ হন। অবশ্য শুধু মোদি জমানায় নয়, আগেও বহু বিচারপতি অবসরের পর বহু পদ পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি এ এম থিপসে, বিচারপতি বিজয় বহুগুণা, বিচারপতি এম রামা জোয়েস, বিচারপতি রাজিন্দর সাচার, বিচারপতি বাহারুল ইসলাম প্রমুখরা।
এসব বিতর্কের মধ্যেই বিলেতের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধান বিচারপতি বলে দিলেন, “একজন বিচারপতি যদি কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ভোটে লড়েন, তাহলে সেটা বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে। কারণ এটাকে অনেকেই বিচারপতির আসনে থেকে স্বার্থের সংঘাত বা সরকারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের মাধ্যম হিসাবে দেখে।” তাঁর সাফ কথা, “ভুল সময়ে বিচারপতিরা সরকারি পদ নিলে সেটা বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাকে টলিয়ে দিতে পারে। কারণ এতে মানুষের মনে হবে, বিচারকের সিদ্ধান্তগুলি ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা ভেবে প্রভাবিত।” প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তাঁর বহু সহকর্মী শপথ নিয়েছেন, অবসরের পর কোনও সরকারি পদ নেবেন না। এটা বিচারব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা রাক্ষার প্রয়াস।
যে ভাবে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্যে বিচারপতিদের সরকারি পদ নেওয়া বা রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানালেন, সেটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন উঠছে, প্রধান বিচারপতি কি শুধুই রঞ্জন গগৈয়ের মতো পূর্বসূরিদের কটাক্ষ করলেন, নাকি একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও এই ধরনের আচরণ থেকে সংযত থাকার বার্তা দিলেন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.