বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: জাতিভিত্তিক জনগণনা শেষ হলে মুখ পুড়তে পারে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। তাই আগেভাগেই মুখরক্ষায় জাতিভিত্তিক জনগণনার দিনক্ষণ ঘোষণা করলেও সেখানে শ্রেণি বিভাজন থাকছে না বলে জানানো হয়েছে। সমাজে কোন জাতের অংশীদারি কত শতাংশ তা জানা গেলেও আর্থসামাজিক পরিস্থিতি গোপন থেকে যাবে। দেশের জনগোষ্ঠীর কোন শ্রেণি আর্থিক, সামাজিক, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে কী অবস্থায় রয়েছে, তা ধামাচাপা দিতেই মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও কেন্দ্রের সাফাই, যেহেতু তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের তালিকা চূড়ান্ত থাকলেও ওবিসি তালিকা চূড়ান্ত হয়নি বলে এই সিদ্ধান্ত।
গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, জাতীয় জনগণনার মধ্যেই জাতিভিত্তিক জনগণনাকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। সাধারণত প্রতি দশ বছর অন্তর জাতীয় জনগণনা বা শুমার হয়। সেই রীতি মেনে জাতীয় জনগণনা হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সেই সময়ে জনগণনা স্থগিত রাখা হয়েছিল। তার পর চার বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে জাতীয় জনগণনা নিয়ে নড়াচড়া শুরু করছে সরকার। মনে করা হচ্ছে, ২০২৭ সালে জাতীয় জনগণনা হলে এর চক্রও বদলে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, জনগণনায় সরকারের গা ছাড়া মনোভাবের জেরে বারবার সরব হয়েছে দেশের বিরোধী শিবিরগুলি। এই অবস্থায় অবিজেপি রাজ্যগুলি আলাদাভাবে নিজ রাজ্যে জনগণনা ও জাত গণনা চালায়। এনডিএ শরিক জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের বিহারেও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে জাত গণনা। এই ইস্যুতে রাজ্যসভাতেও সরব হন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি অভিযোগ করেন, ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণনায় দেরি করছে মোদি সরকার। যার জেরে রেশন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ১৪ কোটি জনতা। তিনি বলেন, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী রেশন দেওয়া হচ্ছে প্রাপকদের। যার ফলে গত ১৫ বছরে দেশের জনসংখ্যা ১২১ কোটি থেকে ১৪০ কোটি ছুঁয়ে ফেললেও যোগ্যরা রেশন পাচ্ছেন না। প্রবল চাপের মুখে পড়ে অবশেষে এই জনগণনার তোড়জোড় শুরু করল মোদি সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.