কর্নাটকের ঐতিহাসিক কেআরএস বাঁধ।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্নাটকের মান্ডা জেলায় কাবেরী নদীর উপর নির্মিত ঐতিহাসিক ‘শ্রীরঙ্গপত্তন কৃষ্ণ রাজা সাগর বাঁধ’ বা কেআরএস বাঁধ। এই বাঁধকে কেন্দ্র করে সরগরম কর্নাটক রাজনীতি। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকের মন্ত্রী এইচসি মহাদেবপ্পা দাবি করলেন, এই বাঁধের ভিত স্থাপন করেছিলেন মুসলিম শাসক টিপু সুলতান। তাঁর এহেন দাবি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। অদ্ভুত এই দাবির পালটা কটাক্ষ করে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, পাগল কুকুরে কামড়েছে ওই মন্ত্রীকে। অভিযোগ তোলা হয়েছে, রাজ্যে মুসলিম তোষণের লক্ষ্যে টিপু সুলতানের আবেগে সুড়সুড়ি দিচ্ছে হাত শিবির।
কংগ্রেস নেতার এহেন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন কর্নাটকের বিজেপি নেতা সিটি রবি। তিনি বলেন, ‘আজ কংগ্রেস নেতারা দাবি করছেন টিপু কেআরএস-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। কয়েকদিন পর হয়ত বলবেন টিপুর বাবা হায়দার আলি রাজ্য সঙ্গীত লিখেছিলেন। আসলে দিল্লি থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত কংগ্রেস নেতাদের পাগল কুকুর কামড়েছে।’ পাশাপাশি বিজেপি নেতা আর অশোক মহাদেবাপ্পার দাবির নিন্দা করে জানিয়েছেন ওনার মন্তব্য শুধু ইতিহাসের বিকৃতি নয়, তুষ্টিকরণের রাজনীতির এক ভয়াবহ নজির। তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “টিপুর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯৯ সালে। এদিকে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে নলওয়াড়ি কৃষ্ণরাজ ওদেয়ারের উদ্যোগে। তিনি রাজ সম্পত্তি বিক্রি করে এই বাঁধ নির্মাণের অর্থ জোগাড় করেছিলেন। গোটা ঘটনায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ কর্নাটকের ঐতিহ্য মুছে ফেলার চেষ্টা করছে মুসলিম তোষণকারী সরকার। এরা মহীশূরের রাজপরিবারকে অপমান করছে।” টিপু ধর্মীয় গোঁড়া বলে তোপ দাগা হয়েছে বিজেপির তরফে।
উল্লেখ্য, সংঘের গবেষণাগার হিসেবে উল্লেখ করা হয় কর্নাটক রাজ্যকে। এখানে কংগ্রেসকে সরিয়ে দীর্ঘবছর ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। সম্প্রতি বিজেপির হিন্দুত্বের অস্ত্রকে ভোঁতা করে ফের সেখানে ক্ষমতায় এসেছে হাত শিবির। এর পর থেকে দফায় দফায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে মুসলিম তোষণের। সম্প্রতি সরকারি টেন্ডারে মুসলিম ঠিকাদারদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণ-সহ একাধিক বিল পাশ করেছে সরকার। অতীতে কর্নাটক রাজনীতিতে টিপু সুলতানকে নিয়েও সংঘাত হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে। এরপর কংগ্রেস সরকারের তরফে কেআরএস বাঁধের কৃতিত্ব টিপু সুলতানকে দেওয়ার ঘটনায় ইতিহাস বিকৃতি ও মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলে সরব হল বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.