সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীদের ‘গদি কাড়া’ বিল নিয়ে কোনওরকম আলোচনা নয়। এই বিল নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে যে যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরি হচ্ছে তাতে অংশ নিতে নারাজ অধিকাংশ বিরোধী দল। ফলে রীতিমতো আতান্তরে পড়েছে কেন্দ্র। বিরোধীরা যদি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে প্রতিনিধি না পাঠায়, তাহলে কী হবে? ভেবে কুল পাচ্ছেন না শাসক শিবিরের কুশীলবরা। শোনা যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়া জোট কোনও প্রতিনিধি না পাঠালে বিরোধী শূন্যভাবেই যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের কথা ভাবছে কেন্দ্র।
বাদল অধিবেশনের শেষদিনে লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। ওই বিলগুলি মূলত সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে আনা। গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনও মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী নিজের পদের জন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ না পান, সেটাই নিশ্চিত করা হবে ওই বিলে। প্রস্তাবিত ওই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপদে আসীন অবস্থায় কেউ যদি গুরুতর অপরাধে ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন তাহলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে। তবে ওই বিলটিকে পাশ না করিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বিল নিয়ে আলোচনার জন্য মোট ২১ সদস্যের যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠিত হবে।
কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবির বিলটির বিরোধিতা করেছে। ইন্ডিয়া জোটের বক্তব্য, এটা আসলে বিরোধীদের নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, এই বিল আসলে সুপার এমার্জেন্সি লাগু করার চেষ্টা। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে চিরতের ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর হিটলারোচিত আঘাত হানা হচ্ছে এই বিলের মাধ্যমে। এটা আসলে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টার শামিল। ইতিমধ্যেই এই বিল নিয়ে যে সংসদীয় কমিটি গঠন করার প্রস্তাব কেন্দ্রের তরফে এসেছে সেই কমিটি বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, আপ এবং শিব সেনার উদ্ধব শিবির। কংগ্রেস এবং বামেরাও কোনও প্রতিনিধির নাম পাঠায়নি।
সরকারি সূত্রের খবর, লোকসভার স্পিকারের তরফে বিরোধীদের কাছে বারবার প্রতিনিধিদের নাম জমা দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও বিরোধী দল তাতে সাড়া দেয়নি। সমস্যা হল অনন্তকাল ধরে এই অচলাবস্থা চলতে পারে না। তাই শেষমেশ বিরোধীরা অংশ না নিলে তাদের ছাড়াই ঘোষিত হবে জেপিসি। তাতে অংশ নেবে এনডিএ এবং এনডিএ বা ইন্ডিয়া জোট বহির্ভূত দলের সাংসদরা। যা কিনা ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে বেনজির। সাধারণত যৌথ সংসদীয় কমিটি সরকার এবং বিরোধী দুই শিবিরেরই প্রতিনিধি থাকেন। আর আগে কোনও যৌথ সংসদীয় কমিটিই বিরোধী প্রতিনিধি ছাড়া গঠিত হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.