নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি এবং আম আদমি পার্টির পর সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল উদ্ধব ঠাকরের শিব সেনা শিবির। সোমবার এমনটাই জানালেন শিব সেনা (উদ্ধব শিবির) সাংসদ সঞ্জয় রাউত। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ছেন, এই কমিটিতে তাঁদের কোনও প্রতিনিধি থাকছে না। অন্যদিকে, এই কমিটিতে হাত শিবিরের কোনও প্রতিনিধি থাকবে কি না, তা নিয়ে সোমবার রাত পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। একের পর এক বিরোধী দল এই কমিটি থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চাপে তারা।
সোমবার সঞ্জয় তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সংবিধান সংশোধনী বিলের মাধ্যমে আসলে মোদি সরকার গণতন্ত্রকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে ফেলার চেষ্টা করছে। এই বিল পর্যালোচনার জন্য জেপিসিতে পাঠানো তাদের একটি কৌশল মাত্র। শিব সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আমাদের দল এই ধরণের জেপিসিতে কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না।’
“Modi govt is pushing the 130th Constitutional Amendment to bulldoze democracy & people’s elected govt. The JPC formed to review this bill is a mere stunt. Shiv Sena chief Uddhav Thackeray clarifies that Shiv Sena will not participate in such a JPC. ”
— Sanjay Raut (@rautsanjay61)
এর আগে এই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল এবং আপ। শনিবার তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটিতে তাদের কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না। কারণ, এটা একটা নাটক বলেই তাঁরা মনে করছেন। অন্যদিকে, রবিবার এক ভিডিও বার্তায় কেন্দ্রের এই বিলের তীব্র সমালোচনা করে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, “মোদি সরকার এক অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বিল নিয়ে এসেছে। এই বিলের লক্ষ্য হল অবিজেপি রাজ্যের সরকার ভেঙে দেওয়া ও সরকার কেনা, বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠানো এবং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করতে এই বিল আনা হয়েছে।” তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের কোনও প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকছে না।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংসদে তিনটি বিল পেশ করেছে কেন্দ্র- ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনিক সংশোধনী বিল এবং জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, ২০২৫। প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রবা রাজ্যের মন্ত্রীরা যদি একটানা ৩০ দিন জেলে থাকেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডযোগ্য শাস্তির অভিযোগ থাকে, তবে ৩১তম দিন থেকেই তাঁরা পদ হারাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বুধবার লোকসভায় এই বিল পেশ করতেই বিরোধীরা এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করে সংসদে কপি ছিড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কংগ্রেস ও আরজেডি-র দাবি, এই বিল সাংবিধানিক নীতি ভঙ্গ করছে, নিরপরাধ না প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত দোষী নয়, এই ন্যায়বোধকে অগ্রাহ্য করছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে এর অপব্যবহার হতে পারে। এই অবস্থায় বিলটিকে ৩১ সদস্যের সংসদীয় যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির, আম আদমি পার্টির পর সেই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল শিব সেনা (উদ্ধব ঠাকরে শিবির)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.