গোবিন্দ রায়: এসএসসি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ‘দাগি’দের একাংশ। চাকরি ফেরত ও পরীক্ষায় বসার আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার সেই চাকরি ফেরতের আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সাফ জানানো হয়েছে, “মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই হস্তক্ষেপ নয়।” ফের পরীক্ষায় বসার আর্জিতেও বিরক্ত বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “সব কিছুর সীমা আছে।”
সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশ করা ‘অযোগ্য’ দের তালিকা চ্যালেঞ্জ করে এবং পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন প্রায় ৩৫০ জন ‘দাগী’ শিক্ষক। মঙ্গলবার তাঁদের ‘যোগ্য’ বলে ঘোষণা করার আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানান, “মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই হস্তক্ষেপ নয়। এই মুহূর্তে ১৮০৬ জনের নথি খতিয়ে দেখা সম্ভব নয়।” এরপরই বিচারপতি প্রশ্ন করেন ‘দাগী’ শিক্ষকরা স্কুলে যাচ্ছেন কি না। আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ি জবাবে জানান, না। পালটা বিচারপতির মন্তব্য, “তাহলে আপনারা আগে আদালতে কেন আসেননি ? শেষ মুহূর্তে কেন এসেছেন? আপনারা ‘দাগী’ শিক্ষক। এখন পরীক্ষায় বসতে চাইছেন ? সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার।”
এরপরই ‘অযোগ্য’দের আইনজীবী বলেন, “অযোগ্যদের তালিকা এই প্রথমবার প্রকাশিত হল। আগে হয়নি।” পালটা বিচারপতির প্রশ্ন, “স্কুলে যেতে তো বারণ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল। তখন পদক্ষেপ করেননি কেন?” বিচারপতি বলেন, “যাদের নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে হয়েছে, প্যানেলের বাইরে থেকে হয়েছে এবং যারা খালি খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল তাদের ‘দাগী’ বলে চিহ্নিত করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে অন্য কোন ‘দাগী’ শিক্ষক থাকতে পারে না। আদালতের পক্ষে প্রত্যেকটি অনিয়ম বা বেআইনি পদক্ষেপ নির্দিষ্ট করে শনাক্ত করা সম্ভব না।”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাদের OMR গণ্ডগোল হয়েছে তাঁরাও ‘দাগী’, তারা সবথেকে বড় ‘অযোগ্য’। যারা ব়্যাঙ্ক জাম্প করেছে তাঁরাও ‘দাগী’। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সব ‘দাগী’দের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া থেকে বিরত করেছি, অ্যাডমিট কার্ড বাতিল করেছি। এরপরও কেউ যদি থেকে যায় তাহলে নথি যাচাইয়ের সময় বাতিল করা হবে।” এরপরই দাগি শিক্ষকদের আইনজীবী বলেন, “আমরাও সেটাই বলছি , আমাদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হোক। তারপর আমরা যমুনায় চলে যাব, কিন্তু এভাবে নয়। আমি পরীক্ষায় বসার জন্য অ্যাডমিট পেয়েছি। হঠাৎ করে তালিকা প্রকাশ করে বলা হল আমি ‘অযোগ্য’। আমি কী করে জানব যে আরও কোনও তালিকা রয়েছে ?” কমিশন এদিন সাফ জানাল, অ্যাডমিট বাতিল করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.