Advertisement
Advertisement
Digital Arrest

ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয়ে স্বর্ণঋণের প্রবণতা বাড়ছে, রাজ‌্যজুড়ে সতর্কতা পুলিশের

বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক পুলিশ আধিকারিকদের।

Gold loan trend increasing due to fear of digital arrest, police on alert across the state

প্রতীকী ছবি।

Published by: Suhrid Das
  • Posted:May 6, 2025 9:16 am
  • Updated:May 6, 2025 9:16 am  

অর্ণব আইচ: ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয়ে ব‌্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। অবস্থা এমনই যে, ডিজিটাল অ‌্যারেস্ট বা ডিজিটাল গ্রেপ্তারি করা হচ্ছে, সেই হুমকি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকেই দৌড়চ্ছেন ব‌্যাঙ্কে। ৯ লক্ষ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন একাধিক ব‌্যক্তি। এমনকী, কলকাতায় সাম্প্রতিকতম যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে স্বর্ণঋণও নিয়েছেন এক ব‌্যক্তি। তিনি ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তারি রুখতে’ পরিবারের লোকের গয়না বন্ধক দিয়ে টাকা জালিয়াতদের অ‌্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন, এমনও অভিযোগ এসেছে লালবাজারে।

Advertisement

কলকাতা ছাড়াও বিপুল টাকা ঋণ নিয়ে জালিয়াতদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রবণতা বিভিন্ন জেলা ও কমিশনারেটে দেখা গিয়েছে, অভিযোগ এমনই। এই ব‌্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। শুধু সোশ‌াল মিডিয়াই নয়, বিভিন্ন আবাসন-সহ এলাকায় বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ডিজিটাল গ্রেপ্তারি হয়েছে বলে ফোন করে হুমকি দিয়ে টাকা চাইলেও কোনওরকম ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই পদ্ধতিতে শুধু সাইবার জালিয়াতরাই ফোন করছে। তাই ভয় পেয়ে ব‌্যাঙ্ক বা কোনও ঋণদাতা সংস্থা অথবা স্বর্ণঋণ সংস্থায় গিয়ে টাকা বা গয়নার বিনিময়ে টাকা ঋণ নিয়ে জালিয়াতদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে কখনও সিবিআই, কখনও বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, দিল্লি পুলিশ, মুম্বই পুলিশের নাম করে ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয় দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এক কর্মীকে ‘ট্রাই’-এর নাম করেও ভয় দেখানো হয়। গত কয়েক মাসের মধ্যে বেহালা, উত্তর কলকাতার বড়তলা-সহ বেশ কয়েকটি থানায় ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ব‌্যাপারে অভিযোগ দায়ের হয়। ৫০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৯০ লক্ষ টাকারও অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে যে, প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয়ে অভিযোগকারীরা টাকা মেটাতে ছুটে গিয়েছেন ব‌্যাঙ্কে। ব‌্যাঙ্ক ও ঋণদাতা সংস্থা থেকে বিপুল টাকা ঋণ নিয়েছেন। এমনকী, কলকাতা পুলিশের এক কর্মীও কয়েক দফায় ১৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জালিয়াতদের অ‌্যাকাউন্টে পাঠান বলে অভিযোগ।

লালবাজার জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর ওই পুলিশকর্মীর কাছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ট্রাইয়ের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ফোন এসেছিল। এক ব‌্যক্তি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লিতে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত ৬৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। এবার সিবিআই, ইডি, রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক তাঁর বিরুদ্ধে ব‌্যবস্থা নেবে। হোয়াটস অ‌্যাপের ডিপিতে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির লোগো দিয়ে বিশ্বাসযোগ‌্য করে তোলা হয়। এরপর ভিডিওকল করে তাঁকে ডিজিটাল অ‌্যারেস্টের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর উপর এতটাই চাপ তৈরি করা হয় যে, তিনি ব‌্যাঙ্ক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে বাধ‌্য হন। এরপরেও তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। ফলে তিনি একটি স্বর্ণঋণ সংস্থায় গিয়ে স্ত্রীর গয়না জমা দিয়ে তিন লক্ষ টাকা নেন। মোট ১৭ লক্ষ টাকা জালিয়াতদের দিয়েছিলেন তিনি। এভাবে জালিয়াতরা যাতে কাউকে ফাঁদে ফেলতে না পারে, সেজন‌্য প্রচারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement