Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kolkata

দিনে শিশু কাঁদলেই জুটত গৃহিণীর ‘মার’, রাতে কর্তার যৌন নির্যাতন! থানায় ১৪ বছরের নাবালিকা ‘পরিচারিকা’

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Maid servant complains against owner of harassment Kolkata

প্রতীকী ছবি

Published by: Kousik Sinha
  • Posted:October 16, 2025 1:45 pm
  • Updated:October 16, 2025 1:53 pm   

অর্ণব আইচ:  মাস তিনেকের শিশুটি কেঁদে উঠলেই ১৪ বছর কিশোরীর গালে এসে পড়ত চড়। মার খেয়ে কিশোরীটি কেঁদে উঠলে ফের মারা হত তাকে। দিনের বেলায় ওই নাবালিকা পরিচারিকার উপর অকথ‌্য অত‌্যাচার চালাতেন গৃহিনী। আর বেশি রাত নামলেই মেয়েটির উপর চলত বাড়ির কর্তার যৌন নির্যাতন। প্রতিবাদ করলেই জুটত মার আর মা-বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি। দিনের পর দিন চলা এই অত‌্যাচার সহ‌্য করতে না পেরে সম্প্রতি বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে নাবালিকা। কয়েকজন প্রতিবেশীর সাহায্য সোজা হাজির হয় পূর্ব কলকাতার এন্টালি থানায়। ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, নির্যাতিতা ওই কিশোরীর বাড়ি বিহারে। এন্টালি এলাকায় তারই এক আত্মীয় থাকেন। দরিদ্র পরিবারের ওই মেয়েটিকে পরিচারিকার কাজ করানোর জন‌্য বিহার থেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। এন্টালির গোরাচাঁদ রোডে ওই দম্পতির বাড়িতে পরিচারিকার কাজের জন‌্য তাকে নিয়োগ করা হয়। পুলিশ জেনেছে, ওই দম্পতিরও আসল বাড়ি বিহারে। ১৪ বছরের ওই কিশোরীর উপর ভার পড়ে দম্পতির সদ্যোজাতের দেখভালের। অনভ‌্যস্ত হাতে সে শিশুটির পরিচর্যা করা শুরু করে। কিন্তু এর পর থেকেই শুরু হয় সমস‌্যা। ওই নাবালিকা পুলিশকে জানিয়েছে যে, শিশুটি কেঁদে উঠলেই সে তাকে নিজের মতো করে থামানোর চেষ্টা করত। কিন্তু কিছুক্ষণ কাঁদলেই বাড়ির গৃহিণীর রাগ গিয়ে পড়ত তার উপর। কেন সে শিশুটির কান্না থামাতে পারছে না, এমন প্রশ্নের সামনে পড়ত সে। আবার সে ইচ্ছা করে শিশুটিকে কঁাদাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তাকে করা হত। কোনওটিরই উত্তর না দিতে পারায় তার উপর শুরু হত অত‌্যাচার। গৃহিণী প্রায়ই ওই নাবালিকাকে মারধর করতেন। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। শিশুটিকে দেখভাল করা ছাড়াও রান্নায় সাহায‌্য থেকে শুরু করে বাড়ির বেশিরভাগ কাজই তাকে করতে হত। আর সেই কাজগুলিও না পারলে তাকে মারধর করা হত বলে অভিযোগ।

সারাদিন খাটনির পর রাতে যখন একটি ঘরের মেঝেয় বিছানা পেতে ঘুমাত, তখন তর উপর চলত দ্বিতীয় দফায় অত‌্যাচার। ওই নাবালিকার অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে মেয়েটির ঘরে প্রবেশ করতেন বাড়ির কর্তা। বিভিন্নভাবে তার উপর চলত যৌন নিগ্রহ। যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করলেই বিহারে লোক পাঠিয়ে কিশোরীর মা ও বাবাকে খুনের হুমকি দিতেন বাড়ির কর্তা। রাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা ঘুমাতে পারত সে। খুব সকালে ফের ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই শুরু হত কাজের চাপ ও তার সঙ্গে অত‌্যাচার। কয়েক মাস ধরে এই অতাচার সহ‌্য করার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রতিবেশীদের ঘটনাটি খুলে বলে নাবালিকা। এর পরই এই ব‌্যাপারে এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মারধর, গুরুতর আঘাত, হুমকি, পকসো আইন ও শিশুশ্রম আইনে পুলিশ ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এর মধে‌্য ওই নাবালিকার মাকে বিহার থেকে ডেকে টাকার প্রলোভনও দেখানো হয়। যদিও সিডব্লুসি-র সামনে নির্যাতিতাকে হাজির করানো হয়েছে। নাবালিকার মেডিক‌্যাল পরীক্ষার পর আদালতে তার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ