স্টাফ রিপোর্টার: নির্যাতিতাকে টেনে হিঁচড়ে গার্ড রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর চিৎকারে ছুটে আসায় সেদিন কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল মনোজিৎরা। ধৃত সেই রক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় জেরার মুখে এমনটাই জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে ধৃত চারজনকে শনিবার মুখোমুখি জেরা করেন তদন্তকারীরা। তাদের বয়ানে একাধিক অসংগতি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, নির্যাতিতাকে যখন গার্ড রুমে জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তিনি চিৎকার করছিলেন। সেই চিৎকার শুনে ছুটে আসেন রক্ষী। কী হয়েছে জিজ্ঞেস করলে মনোজিৎ, জায়েব, প্রমিত তাকে চলে যেতে বলে। বেশি প্রশ্ন করলে গুলি করে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। তাহলে কি অভিযুক্তদের কারও কাছে সেই সময় আগ্নেয়াস্ত্র ছিল? রক্ষীর বয়ানের পর তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে সাউথ ক্যালকাটা কলেজের আরও এক নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তিনি ২৫ জুন সকালের ডিউটিতে ছিলেন। তার ডিউটি শেষ হওয়ার কথা ছিল বিকেল চারটে। কিন্তু রাত ৮টা ২৫ পর্যন্ত কলেজেই ছিলেন। বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা ২৫ পর্যন্ত সকালের ওই রক্ষী কাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রেখে গেছিলেন বা পিনাকির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল কি না, সবই যাচাই করে দেখছেন গোয়েন্দারা। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মনোজিৎ, জায়েব ও প্রমিত বারবার নিজেদের বয়ান বদল করে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ও তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তারা। বিভ্রান্তি দূর করতে ও তথ্যপ্রমাণ যাচাই করতে ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে টানা জেরা চলে।
সূত্রের খবর, ইউনিয়ম রুমের বাথরুম ও গার্ড রুমে মনোজিৎ নির্যাতিতাকে কয়েকজন প্রভাবশালীর নাম করে ভয় দেখায়। তাকে বাধা দেওয়া হলে ওই প্রভাবশালীদের বলে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হবে বলেও নির্যাতিতাকে ভয় দেখানো হয়। গার্ড রুমে তরুণীকে বিবস্ত্র করার সময় জায়েব ও প্রমিতও ঢোকে। নির্যাতিতা নিজের পোশাক খুলতে বাধা দিলে জায়েব ও প্রমিত তাকে মারধর করে। তরুণীকে এও বলে দাদা যা বলছে চুপচাপ তা শুনতে। না হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই রাতে গেট খুলে দেওয়া হয় যাতে সে নিজে থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তা না হলে মনোজিতের পর জায়েব ও প্রমিতেরও তরুণীর উপর পাশবিক অত্যাচার চালানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নির্যাতিতার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে দেখে জায়েব ও প্রমিত আর সাহস দেখায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.