গোবিন্দ রায়: কলকাতা হাই কোর্টে ইউটিউবার শর্মিষ্ঠা পানোলির জামিন মঞ্জুর। ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী। তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না শর্মিষ্ঠা। পড়াশোনার প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতে হলে নিম্ন আদালতকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। শর্মিষ্ঠাকে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে। তবে তাকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও প্রয়োজন নেই।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসা করে নির্দিষ্ট ধর্মকে ঠিক কোন ভাষায় অপমান করেছিলেন শর্মিষ্ঠা, তা অভিযোগপত্রে লেখা ছিল না। যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল তাতে শুধুমাত্র গ্রেপ্তার করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল পুলিশ। গ্রেপ্তার করতেই হবে বলা হয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল। শর্মিষ্ঠা পালোনির আইনজীবীর দাবি, “আদালত কোনও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেনি। শুধুমাত্র তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অধিকার দিয়েছিল। এবং গ্রেপ্তার করার অধিকার আছে বলে জানিয়েছিল। গ্রেপ্তার করতে হবে বলে কোনও নির্দেশ দেয়নি।” তাতে সহমত পোষণ করেন বিচারপতিও। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আদালতের এই নির্দেশকে আমার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বলে মনে হচ্ছে না।” রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্তের সওয়াল, “অধিকার দেওয়া মানেই অনুমতি দেওয়া। এটাই যথেষ্ট।” বৃহস্পতিবার এজলাসে দাঁড়িয়ে রাজ্যের আইনজীবী আরও বলেন, “শর্মিষ্ঠা পালোনির উচিত ছিল জামিনের জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চে আবেদন জানানো।”
এই মামলা নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর পক্ষেও সওয়াল করেন রাজ্যের আইনজীবী। তাঁর দাবি, “অভিযোগ থেকে যদি দেখা যায় যে ধর্তব্যযোগ্য বা আদালতগ্রাহ্য অপরাধ হয়েছে তাহলে পুলিশ FIR দায়ের করতে পারে। পুলিশ শর্মিষ্ঠা পালোনিকে নোটিস দেওয়ার জন্য তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তিনি ছিলেন না। এরপর সমস্ত নিয়মবিধি মেনে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।” এই যুক্তিতে অবশ্য কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, “যদি শর্মিষ্ঠা পালোনিকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে তিনিও যে অভিযোগ করেছিলেন তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা উচিত। একজন মহিলাকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তাতে আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।” শুনানির একেবারে শেষ লগ্নে বিচারপতির প্রশ্ন, “তদন্ত কি শেষ হয়েছে?” রাজ্যের আইনজীবীর দাবি, এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। কারণ, এখনও পর্যন্ত শর্মিষ্ঠাকে নিজেদের হেফাজতে পায়নি পুলিশ। বিচারপতি স্মরণ করিয়ে দেন, “এই অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ তিন বছর। এটা মাথায় রাখতে হবে। তিনি একজন ছাত্র।” শুনানি শেষে শর্মিষ্ঠাকে অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজা বসু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.