সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃত্রিম উপায়ে নিজেকে সুন্দরী করে তোলার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই নিজেকে আরও সুন্দর করে তোলার জন্য কেউ করাচ্ছেন প্লাস্টিক সার্জারি, আবার কেউ-বা কসমেটিক সার্জারি। এই সমস্ত অস্ত্রোপচারে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে জেনেও ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। সম্প্রতি ব্রাজিলিয়ান ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাডায়ার মেন্ডেস দুত্রা জুনিয়রের মৃত্যু হয়েছে। তিনি কিছুদিন আগেই ‘ফক্স আই’ সার্জারি করেছিলেন। এর পরই মুখের একটি সংক্রমণ ঘটে, যাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
কী এই ‘ফক্স আই’ সার্জারি?
ফক্স আই সার্জারি হল একটি কসমেটিক প্রক্রিয়া। এর লক্ষ্য হল চোখকে আরও লম্বাটে ও বাদামের মতো আকার দেওয়া। এই সার্জারিতে ভ্রু-র বাইরের অংশ এবং চোখের বাইরের কোণ (ল্যাটারাল ক্যান্থাস) উপরের দিকে টেনে তোলা হয়। এটি মুখমণ্ডলকে তারুণ্যময় ও আকর্ষণীয় লুক দিতে সাহায্য করে। স্থায়ীভাবে সার্জারির মাধ্যমে অথবা অস্থায়ীভাবে থ্রেড লিফটের মতো পদ্ধতি প্রয়োগে ফক্স আই সার্জারি করা হয়। বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে এই সার্জারি করা হয়ে থাকে। কোনটায় ত্বকের নিচে অস্ত্রোপচার থ্রেড ঢোকানো হয়। কোনটায় বা চোখের কোণার কাঠামোকে পরিবর্তন ও পুনঃস্থাপন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় চোখের শেপ এমনটা করে তোলা সম্ভব, যেমনটা সাধারণত ফিল্টার অ্যাপ ব্যবহার করে অনেকেই করে থাকেন।
এই পদ্ধতি কেন বিপজ্জনক?
ফক্স আই সার্জারি থ্রেড লিফটের মাধ্যমে চোখ ও ভ্রুর কোণকে উপরের দিকে টেনে “ফক্সি” রূপ দেওয়ার একটি কসমেটিক প্রক্রিয়া। এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ও বিপদ রয়েছে। চোখ অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ হওয়ায় এই ধরনের প্রক্রিয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
(১) জীবাণুমুক্ত পরিবেশে বা অদক্ষ হাতে এই সার্জারি করলে গুরুতর সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। এই সংক্রমণ ত্বকের গভীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকী টিস্যু নেক্রোসিস বা স্কিন ডেথ পর্যন্ত ঘটতে পারে।
(২) চোখের চারপাশে সংবেদনশীল স্নায়ু জালিকা উপস্থিত থাকে। ভুলভাবে থ্রেড স্থাপন বা অস্ত্রোপচারের কারণে এই স্নায়ুগুলোর ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে চোখ এবং তার আশেপাশে সংবেদনশীলতা কমে যাওয়া, নড়াচড়ার সমস্যা, বা অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি দেখা দিতে পারে।
(৩) ‘ফক্স আই’ লুকের জন্য প্রায়শই পিডিও (PDO) থ্রেড ব্যবহার করা হয়। এই থ্রেডগুলি স্থানচ্যুত হতে পারে। ত্বক ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে বা ভেঙে যেতে পারে। এর ফলে ত্বকে ভাঁজ পড়া, কুঁচকে যাওয়া, অসামঞ্জস্যতা বা স্থায়ী বিকৃতি দেখা দিতে পারে।
(৪) চোখের আশেপাশের রক্তনালী বা অরবিটাল স্ট্রাকচারে গুরুতর আঘাত লাগলে, কিংবা ফিলার ব্যবহারের ফলে রক্তনালীতে ব্লক তৈরি হলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা বা স্থায়ী অন্ধত্বের মতো ভয়াবহ জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এছাড়াও, শ্বাসকষ্ট এবং সেপসিসের মতো পদ্ধতিগত জটিলতাও দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে যদি প্রক্রিয়াটি অননুমোদিত বা অদক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই এই ধরনের কসমেটিক প্রক্রিয়া করার আগে একজন বোর্ড-সার্টিফায়েড প্লাস্টিক সার্জনের সাথে পরামর্শ করা জরুরি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.