অভিরূপ দাস: ছেলেমেয়ের সময়-ধৈর্য নেই দেখিয়ে দেওয়ার। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে অনলাইন শপিং, কে শেখাবে প্রবীণদের! এবার সেই দায়িত্ব তুলে নিল কলকাতা পুলিশ। প্রণাম প্রকল্পের মাধ্যমে তারা শহরের প্রবীণদের জন্য চালু করছে ডিজিটাল অ্যাওয়ারনেস-লিটারেসি ওয়ার্কশপ। যেখানে শেখানো হবে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার। কীভাবে মেল করতে হয়। অনলাইনে কেনাকাটা করে কী উপায়ে, তা-ও শেখানো হবে হাতে কলমে।
টালিগঞ্জে প্রণামের অফিসে বসছে এই ডিজিটাল অ্যাওয়ারনেস-লিটারেসি ওয়ার্কশপ। শহরের প্রবীণ নাগরিকদের উপর সমীক্ষা চালিয়েছে ‘হেল্প এজ ইন্ডিয়া’ সংস্থা। এ সমীক্ষার পর উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। সম্প্রতি সে তথ্য পেশ করার মঞ্চে হেল্প এজ ইন্ডিয়ার রাজ্য অধিকর্তা প্রিয়াঞ্জলি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শহরের প্রবীণদের নানান সমস্যা। কোনও প্রবীণ নাগরিক বলেছেন, “এই প্রজন্মের সবাই ফোনেই ব্যস্ত। পাশাপাশি বসে গল্প করার সময়ই নেই।” অসংখ্য অশীতিপর শহরে একাই থাকেন। ছেলে-মেয়ে বাইরে। তাঁদের বক্তব্য, “আগে আমরা বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতাম। এখন একা থাকলে মোবাইল স্ক্রল করি।”
একাকীত্বে ভোগা বয়স্করা প্রণামের সদস্য হতে চাইছেন। যে কারণে শহর কলকাতায় প্রণামের সদস্য ২২ হাজারেরও বেশি। এরা স্মার্টফোনের ব্যবহার জানেন না। ভুল করে কোনও সাইটে ঢুকে সাইবার জালিয়াতদের খপ্পরে পড়েন। কলকাতা পুলিশের প্রণাম প্রকল্পের জয়েন্ট কনভেনর এষা দত্ত জানিয়েছেন, “এদের জন্যই চালু করা হয়েছে ‘ডিজিটাল লিটারেসি’ প্রোগ্রাম। ট্যাক্সি বুক করা থেকে ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা। সবকিছুর অ্যাপ চলে এসেছে। স্মার্ট ফোনও আছে সিংহভাগ প্রবীণদের কাছে। কিন্তু কীভাবে সেটা ব্যবহার করে সেটা ওরা জানেন না। সেটাই শেখাচ্ছে প্রণাম।”
এষা দত্তর কথায়, “খতিয়ে দেখলেই দেখা যাচ্ছে শহরে একের পর এক সাইবার ক্রাইম জালিয়াতদের টার্গেট গ্রুপ প্রবীণ নাগরিক। কলকাতা পুলিশের সাইবার সেফটি অ্যান্ড সাইবার ক্রাইমের অ্যাডিশনাল ওসি উত্তম পাইক জানিয়েছেন, বয়স্কদের আমরা পরামর্শ দিই ফেসবুকে অচেনা কারও বন্ধুত্বের অনুরোধ নেবেন না। প্রতিদিন ন্যূনতম দু’ঘণ্টা মোবাইল সুইচ অফ করে রাখুন। এতে জালিয়াতদের ট্র্যাক করতেও সমস্যা হবে। শুধু নেট শিক্ষা নয়, প্রণাম প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের প্রবীণদের একাকীত্ব কাটাতে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফি মাসে। সিনেমা-থিয়েটার-নাটক-মিউজিয়াম দর্শনে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের প্রবীণদের। এষা দত্ত জানিয়েছেন, প্রতিটি থানা এলাকার বয়স্কদের আলাদা আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.