Advertisement
Advertisement
Personal Finance

‘প্ল্য়ান’ এবং ‘প্রোডাক্ট’ যেন একই সুরে বাজে! লগ্নিকারীদের জন্য় বিশেষ পরামর্শ

আয়কর ইত্য়াদির উপর নজর রাখুন।

Things to know about plan and product for investment

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:June 23, 2025 2:37 pm
  • Updated:June 23, 2025 2:37 pm  

সঞ্চয়-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পার্সোন‌াল ফিনান্স প্র‌্যাকটিশনার শৈবাল বিশ্বাস জোর দিলেন, তাঁর নিজের ভাষায়, “দু-চারটি সাধারণ কিন্তু প্রয়োজনীয়” অভ‌্যাস গড়ে তোলার উপর। ‘‘মানুষ মাঝেমাঝেই এগুলোর কথা ভুলে যায়, তাই নিয়মিতভাবে সকলকে মনে করিয়ে দিতে চাই,” নীলাঞ্জন দে-কে তিনি বললেন।

প্র. বাজার যে প্রতিবার ইতিবাচক ভূমিকায় থাকবে, তার গ‌্যারান্টি নেই। বিপদ আচমকা আসতেই পারে। ইনভেস্টরদের প্রতিক্রিয়া বিরূপ হওয়া স্বাভাবিক ….
উ. হ্যাঁ, তা হওয়া আশ্চর্য নয়। লগ্নিকারীরা এই ব‌্যাপারে খুব স্পর্শকাতর হন, মার্কেট হঠাৎ পড়লে উদ্বেগের অন্ত থাকে না। এতে আপত্তি নেই, তবে আমার পর্যবেক্ষণ একটু আলাদা। ইনভেস্টররা তাঁদের মূল পরিকল্পনা আচম্বিতে স্থগিত করে ফেলেন, পরে আফশোস হয়, ভাবেন কেন করলাম! তাঁদের উদ্দেশ‌্য করে বলছি, প্ল‌্যান আদৌ বদল করতে হবে কি না, তা বুঝতে হবে। যদি সঙ্গত কারণ থাকে, অসুবিধা নেই। তবে সবসময় সঙ্গত কারণ খুঁজে পাই না। দেখি, আচমকা কোনও ভুল পদক্ষেপ নিয়েই নিয়েছেন তাঁদের একাংশ। এতে রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা পিছিয়ে যায়, অথবা অন‌্য কোনওভাবে পোর্টফোলিওর উপর চাপ পড়ে। তা বাঞ্ছনীয় নয়। আমি সবসময় বলি প্ল‌্যান যেন যথাযথ হয়, আর তার জন‌্য যেন সঠিক পদক্ষেপ নিতে দেরি না হয়।

প্র. এই যে পদক্ষেপের উল্লেখ করলেন, সেগুলো কী? একটু বুঝিয়ে বলুন।
উ. দেখুন, দু-চারটি সাধারণ কিন্তু প্রয়োজনীয় অভ‌্যাসের কথা গোড়াতেই বলি। নিয়মিত বিনিয়োগ, যথা শীঘ্র শুরু করা, পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া, অ‌্যাসেট অ‌্যালোকেশন ঠিক রাখা — এই সবকিছুই জরুরি। এর সঙ্গে বিশেষভাবে বলি, প্রয়োজন বুঝে অ‌্যালোকেশনে পরিবর্তন আনার প্রসঙ্গে। আমি দেখতে পাই যে, সব ইনভেস্টররা এই ব‌্যাপারটি নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল নন। একটা উদাহরণ দিই। মনে করুন একজন অল্পবয়সী লগ্নিকারী তাঁর নিজের জন‌্য বিশেষ কোনও অ‌্যালোকেশন বেছে নিয়েছেন। এবার ধরা যাক, দেড়-দুই দশক বাদে কোন কারণে তাঁর “লাইফ স্টেজ” বদলাল। কিন্তু ভালো পরামর্শের অভাবে হয়তো তিনি অ‌্যালোকেশনে বদল আনলেন না। সেই পুরনো পদ্ধতিতেই আটকে রইলেন। এখানেই তাঁর পরাজয়। আবার নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে পারি যে, উলটোটাও কিন্তু দেখেছি। সুযোগ বুঝে পন্থা বদলেছেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী, তাতে তাঁর পোর্টফোলিও যথেষ্ট জোরালো থেকেছে। সময়মতো নতুন ভাবনাচিন্তা করেছেন, তার ফলে লাভবান হয়েছেন তিনি।

প্র. এখন তো নিত‌্যনতুন প্রকল্পের ছড়াছড়ি। সাধারণ লগ্নিকারী যথার্থ “প্রোডাক্ট সিলেকশন” করবেন কী করে?
উ. ঠিকই বলেছেন। বিকল্পের অভাব তো দূরের কথা, নতুন প্রোডাক্ট ক্রমাগতই আসছে লগ্নির বাজারে। আমার মতে তাতে ভালই হচ্ছে, কারণ ইনভেস্টরদের সামনে প্রকল্পের বৈচিত্র‌্য বাড়ছে, সংখ‌্যায় বেশি তো বটেই। তবে হ‌্যাঁ, বেছে নেওয়া তেমন সহজ নয়। এখানেই উপযুক্ত পেশাদার সহযোগীর ভূমিকায় থাকতে পারেন। কেবল পুরনো পরিসংখ‌্যান দেখেই প্রকল্প বাছাই করা ভুল। তথ‌্য যোগাড় করে তার প্রয়োগ যাতে যথাযথ হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে এত তথ‌্য, এত প্রযুক্তি থাকা সত্বেও, উদ্দেশ‌্যগুলো ব‌্যর্থ হয়ে যাবে, কার্যকরী হবে না।

আমাদের দেখতে হবে, সাধারণ মানুষ যেন বিড়ম্বনায় না পড়েন, তাদের কার্যকলাপগুলো যেন যথেষ্ট স্বচ্ছ হয়। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি বিশেষ পয়েন্টের উপর জোর দিতে চাই আমি। পড়ে নিন।
১. প্ল‌্যান এবং প্রোডাক্ট যেন এক সুরে বাজে, দুইয়ের মধ্যে বিচ্য়ুতি না হয়।
নতুন প্রোডাক্ট আসতেই থাকবে। পরখ করে দেখুন, প্রয়োজনে নিজের পোর্টফোলিওয় জায়গা দিন।
২. আয়কর ইত‌্যাদির উপর নজর রাখুন। সর্বশেষ নিয়মকানুনের অভিঘাতে আপনার পরিকল্পনায় কোনও বাধাবিপত্তি আসছে কি না, বুঝে নিন।
৩. প্রযুক্তি ব‌্যবহার করতে পিছনে হবেন না। দরকার মনে করলে টেকনোলজির প্রয়োগ কমবেশি অনেকেই করেন। আপনি যেন সেই দলে থাকেন, আশা করব।
৪. বিনা রিস্কে রিটার্ন আসে না। এই খুব “বেসিক” প্রসঙ্গটি কখনও ভুলবেন না।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement