সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও সন্ত্রাসের কথা তো দূর। উলটে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে অশান্তি ছাড়ানোর অভিযোগ সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) ঘোষণাপত্রে! সূত্রের খবর, এর জেরেই এবার সেই ঘোষণাপত্রে সই করতে অস্বীকার করল ভারত। পহেলগাঁও সন্ত্রাস এবং অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতের অবস্থান এবং পাকিস্তান কীভাবে প্রত্যক্ষে জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে, সেটা গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে ভারত। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে কূটনৈতিকভাবে ইসলামাবাদের পাশে থেকেছে ‘বন্ধু’ বেজিং। এদিকে আবার এসসিও বৈঠকের সভাপতিত্বও করে চিন। তাই ওয়াকিবহলা মহলের মতে, ইচ্ছাকৃতভাবেই এসসিও নথিতে পহেলগাঁও সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ সরিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে এধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই নথিতে পাকিস্তানের বালোচিস্তানের কথা উল্লেখ থাকলেও পহেলগাঁওয়ের সেই নৃশংস ঘটনার কোনও উল্লেখ নেই। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলেই পাকিস্তান এবং চিনের দ্বিচারিতা ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল বলেই মনে করছেন কূটনীতিবিদদের একাংশ।
বুধবার থেকে চিনের কিংদাও শহরে এসসিও বৈঠক শুরু হয়েছে। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। ভারতের পাশাপাশি এই বৈঠকে অংশ নিয়েছে, চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া, ইরান, বেলারুশ, কাজাখিস্তান, কিরগিজস্তান, তাজাকিস্তান ও উজবেকিস্তান-সহ মোট ১০ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে পাকিস্তানেকে বিঁধে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধি সহাবস্থান করতে পারে না। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য যারা সন্ত্রাসবাদকে লালন-পালন করে এবং ব্যবহার করে, তাদের চরম পরিণতি ভোগ করতেই হবে। কিছু কিছু দেশ সন্ত্রাসবাদকে তাদের বিদেশ নীতির হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছে। এই ধরনের নীতির কোনও স্থান থাকা উচিত নয়। এসসিওর এই ধরনের দেশগুলির কড়া সমালোচনা করা উচিত।”
এরপরই তিনি পহেলগাঁও সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উথ্থাপন করে বলেন, “পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে হিন্দুদের হত্যা করেছে জঙ্গিরা। এর নেপথ্যে ছিল লসকর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট। সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করা এবং তার যোগ্য জবাব দেওয়ার অধিকার ভারতের আছে। আর তাই জন্যই অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারত। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ফের একবার আমরা গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমরা এটাও দেখিয়েছি যে সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থলগুলি আর নিরাপদে নেই। আমরা তাঁদের ধ্বংস করেই ছাড়ব।” সন্ত্রাসবাদকে উপড়ে ফেলতে রাজনাথ এসসিও-র সদস্যদের একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও এসসিও-র ঘোষণাপত্রে পহেলগাঁও নিয়ে কোনও উল্লেখই করা হয়নি। উলটে সেখানে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে অশান্তি ছাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। আর এর জেরেই ক্ষুব্ধ হয়ে রাজনাথ ঘোষণাপত্রে সই করতে অস্বীকার করেন।
২০২০ সালে গালওয়ানে সীমান্ত ইস্যুতে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত চরম আকার নিয়েছিল। সেই ঘটনার ৫ বছর পর চিনে গিয়েছেন রাজনাথ। মনে করা হয়েছিল, অতীতের কালো মেঘ সরে ভারত-চিনের সম্পর্ক মসৃণ হবে। কিন্তু এই ঘটনার পর ফের একবার তাতে প্রশ্নচিহ্ন পড়ল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.