সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকাকে রুখতে এশিয়ায় তৈরি হচ্ছে ভারত-চিন-রাশিয়া অক্ষ! সদ্যসমাপ্ত এসসিও বৈঠকের পর এই কথাই বলছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। এহেন পরিস্থিতিতেই ভারতকে ফের কাছে টানতে উদ্যোগী হল আমেরিকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের আগেই মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও বলেন, নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক চলতি শতাব্দীর পথপ্রদর্শক হতে পারে।
এসসিও বৈঠক চলাকালীনই ভারতে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের তরফে এক্স হ্যান্ডেলে রুবিওর মন্তব্য পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘আমাদের দুই দেশের মানুষের মধ্যে যে বন্ধুত্ব রয়েছে, সেটাই আমাদের সহযোগিতার মূলমন্ত্র। আমাদের আর্থিক সম্পর্ক যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। দুই দেশের সহযোগিতাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ রুবিওর এই মন্তব্য এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দূতাবাসের তরফে লেখা হয়, নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক চলতি শতাব্দীর পথপ্রদর্শক। এই সম্পর্ক আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে আমেরিকার এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে ভারত-আমেরিকার সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ভারতের দাবি উড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারংবার বলে এসেছেন, তিনিই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির মূল কারিগর। ট্রাম্পের এই দাবি বারবার অস্বীকার করেছে ভারত। ঘটনাচক্রে, তারপরেই ভারতের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে আমেরিকা।
আমেরিকার উপর পালটা শুল্ক না বসালেও, মার্কিন চোখরাঙানি উপেক্ষা করেছে ভারত। আগের মতোই বিপুল পরিমাণে রুশ তেল আমদানি করেছে ভারতীয় শোধনাগারগুলি। এমনকি এসসিও বৈঠকে চিনের সঙ্গেও বন্ধুত্বের ডাক দিয়েছেন মোদি। গোটা বিশ্বকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, কঠিন সময়ে একে অপরের পাশে থেকেছে ভারত এবং রাশিয়া। এহেন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন আমেরিকা। কারণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের দাপট রুখতে ভারতই ছিল আমেরিকার। তাই দূরে সরে যাওয়া নয়াদিল্লিকে ফের কাছে ফেরাতে উঠেপড়ে লেগেছে ওয়াশিংটন।
কেন আমেরিকার এই উদ্যোগ? আসলে চিনকে রুখতে আমেরিকার অন্যতম অস্ত্র হল কোয়াড জোট। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে তৈরি অক্ষটি দীর্ঘদিন ধরেই বেজিংয়ের মাথাব্যথার কারণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের খামখেয়ালিপনায় আমেরিকার হাত থেকে এই অস্ত্রটি প্রায় হাতছাড়া। কারণ, ভারত ছাড়া কোয়াড ‘ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দার’। মোদি-জিনপিং উষ্ণ করমর্দনে এটা সাফ, চিন যদি গালওয়ানের পুনরাবৃত্তি না করে তাহলে ভারতও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের নীল নকশায় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। পারস্পরিক বোঝাপড়ায় সম্পর্কে উন্নতি হলে মার্কিন আধিপত্যবাদ এই অঞ্চলে হালে পানি পাবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.