ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব কূটনীতিতে নয়া মাইলফলক। দীর্ঘ ৭ বছর পর চিন সফরে গিয়ে রবিবার চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দীর্ঘ ৫০ মিনিটের এই বৈঠকের পর জিনপিংয়ের বার্তা, ‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে ভারত ও চিনের বন্ধুত্ব একান্ত জরুরি।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক দাদাগিরির মাঝেই জিনপিংয়ের এই হাতি-ড্রাগনের বন্ধুত্বের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। মোদি ও শি-এর এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও।
এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “গত বছর কাজানে আমাদের সফল বৈঠকের পর আপনার সঙ্গে ফের সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি আনন্দিত। এসসিও সম্মেলনের জন্য চিন আপনাকে স্বাগত জানায়।” পাশাপাশি এই বৈঠককে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে জিনপিং বলেন, এই বিশ্ব বর্তমানে বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় আমাদের সভ্যতা সবচেয়ে প্রাচীন। এবং বিশাল জনসংখ্যার সঙ্গে আমরা গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ন অংশ। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের বন্ধুত্ব ও ভালো প্রতিবেশী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা একান্ত আবশ্যক।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “গত বছর কাজানে আমাদের মধ্যে খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছিল যা আমাদের সম্পর্ককে ইতিবাচক দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।” মোদি আরও বলেন, “সীমান্ত সমস্যার বিষয়ে আমাদের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা ফের শুরু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলও আবার শুরু হচ্ছে। দুই দেশের ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ আমাদের সহযোগিতার সঙ্গে জড়িত। এটি সমগ্র মানবতার কল্যাণের পথ প্রশস্ত করবে। পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সাত বছর পর ড্রাগনের দেশে পা রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি, জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সম্ভাব্য বৈঠক ঘিরে উত্তেজনার বাড়ছে চিনের এই বন্দর শহরে। ট্রাম্পের শুল্ক বোমার মাঝে এই নতুন বন্ধুত্ব পারদ চড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শুল্কের অস্ত্র হাতে দাপাদাপি শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ তেলের অজুহাতে ভারতের উপর চেপেছে ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপ। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে লাগাতার রাশিয়াকেও শাসানি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী একদফা শুল্কযুদ্ধের পর বিরল খনিজ রপ্তানি না করলে চিনের উপরও ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। ইচ্ছেমতো নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের খামখেয়ালিপনায় ট্রাম্পের উপর বিতশ্রদ্ধ এশিয়ার দেশগুলি। বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমেরিকার এই আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে গ্লোবাল সাউথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাঝে মোদি ও জিনপিংয়ের এই বন্ধুত্বের বার্তা আমেরিকার কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.